১.টিস্যু পেপারে বীজ জার্মিনেশন পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে বীজের জার্মিনেশন এর হার ৮০% হতে ৯৯% পর্যন্ত হয়। যে সব বীজের খোলস/দানা অনেক পুরো থাকে তাদের জন্য এই পদ্ধতি- যেমন সাম্মাম ফল, তরমুজ , করলা, ঝিঙা, পেঁপে, পুঁই শাক, লাউ, গোলাপফুল, ভুট্টা, সূর্যমুখী, বাঙ্গি, ঢেঁড়শ, কুমড়ার মতো বীজ আগে থেকে অঙ্কুরিত করে লাগালে ফলন দ্রুত আসে।
প্রথমে বীজগুলো ২-৩ ঘন্টা হালকা রোদে শুকাতে দিন
⬇️
এরপর ১৫-২০ মিনিট ছায়ায় রেখে দিন
⬇️
তারপর ১০-১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন (বিভিন্ন বীজের ক্ষেত্রে সময় সামান্য কম বেশি এতে পায়ে)।
⬇️
বীজগুলো ভেজা টিস্যু বা সুতি কাপড়ে মুড়ে বদ্ধ পাত্র/বক্সে ৩–৭ দিন রাখুন, যাতে বাতাস ঢুকতে না পারে। স্বচ্ছ ঢাকনা থাকলে বাইরে থেকেই জার্মিনেশন দেখা যাবে।
⬇️
যখন অঙ্কুরিত হয়ে শেকড় বের হবে, তখন রোপণের জন্য প্রস্তুত
⬇️
মাটি তৈরি ও রোপণের পদ্ধতি:
৭০% কোকোপিট ও ৩০% ভার্মিকম্পোস্ট মেশানো একটি মিশ্রিণ তৈরি করতে হবে। এটি জনপ্রিয় পদ্ধতি।
⬇️
কোকোপিট একদিন আগে পানি দিয়ে ভিজিয়ে নরম করুন এবং অতিরিক্ত পানি ঝরিয়ে নিন। এরপর তা ভার্মিকম্পোস্টের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
⬇️
সীডলিং ট্রে-তে মিশ্রিত মাটি ভরাট করুন। এরপর আরেকটি ট্রে ব্যবহার করে মাটির উপর হালকা চাপ দিয়ে ১–২ ইঞ্চি গর্ত তৈরি করুন। প্রতিটি গর্তে অঙ্কুরিত বীজ বসিয়ে মাটি দিয়ে ঢেকে দিন। হালকা পানি স্প্রে করার পর কালো পলিথিন দিয়ে ঢেকে ২–৩ দিন নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দিন।
⬇️
২–৩ দিন পর অঙ্কুরিত বীজ থেকে চারা বের হলে হালকা পানি স্প্রে করুন এবং ছায়াযুক্ত হালকা রোদে রাখুন। চারা যখন ৩–৪টি পাতা গজাবে, তখন বড় টব বা ক্ষেতে স্থানান্তর করুন।
২. কোকোপিট এ বীজ জার্মিনেশন পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে বীজের জার্মিনেশন হার অনেক বেশি (৮০%–৯৯%) হয়। বিশেষ করে ছোট দানার বীজ যেমন—মরিচ, ক্যাপসিকাম, বেগুন, টমেটো, শসা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, স্ট্রবেরি, ব্রকলি, লেটুস, বরবটি, শিম, কাঁকরোল, ধনিয়া পাতা, ডাটা শাক, লাল শাক, পালং শাক, কলমি শাক, কচু, মূলা, বিট, গাজর, সরিষা, মেথি, পেঁয়াজ, আদা, হলুদ, রসুন, আলু, বাদাম, কালোজিরা ও ফুলের বীজ যেমন—গাঁদা, অপরাজিতা, ক্রিস্যান্থেমাম, ডালিয়া, কসমস, জিনিয়া ইত্যাদি বীজের জন্য এটি অত্যন্ত কার্যকর।
প্রথম ধাপ প্রথমে বীজগুলো ২০-৩০ মিনিট হালকা রোদে দিন
⬇️
এরপর ১৫-২০ মিনিট ছায়ায় রেখে দিন
⬇️
| তারপর ১০-১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন |
⬇️
ভেজা বীজগুলো তুলে একটা শুকনা সুতির কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে।
⬇️
বীজগুলো ভেজা টিস্যু বা সুতি কাপড়ে মুড়ে ২–৩ দিন বদ্ধ পাত্র/বক্সে রাখুন, যাতে বাতাস ঢুকতে না পারে। ঢাকনা স্বচ্ছ হলে বাইরে থেকেই সহজে বোঝা যাবে বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে কিনা।
মাটি তৈরি ও বীজ বপন পদ্ধতি:
৭০% কোকোপিট ও ৩০% ভার্মিকম্পোস্ট মিশিয়ে একটি মাটির মিশ্রণ তৈরি করতে হয়। এটি চারাগাছ তৈরির জন্য একটি জনপ্রিয় ও কার্যকর পদ্ধতি।
⬇️
কোকোপিট একদিন আগে পানি দিয়ে ভিজিয়ে নরম করুন এবং অতিরিক্ত পানি ঝরিয়ে নিন। এরপর তা ভার্মিকম্পোস্টের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
⬇️
সীডলিং ট্রে-তে মিশ্রিত মাটি ভরাট করে আরেকটি ট্রে দিয়ে চাপ দিয়ে ১–২ ইঞ্চি গর্ত করুন। প্রতিটি গর্তে বীজ দিয়ে মাটি দিয়ে ঢেকে দিন। এরপর হালকা পানি স্প্রে করে ট্রের উপর পাটের বস্তা বিছিয়ে তার উপরে পলিথিন দিয়ে ঢেকে নির্দিষ্ট স্থানে ২–৩ দিন রাখুন।
⬇️
২–৩ দিন পর বীজ অঙ্কুরিত হলে হালকা পানি স্প্রে করুন এবং ছায়াযুক্ত হালকা রোদে রাখুন। চারা ৩–৪টি পাতা গজালে বড় টব বা ক্ষেতে স্থানান্তর করুন।
৩.মাটি ব্যবহার করে বীজ জার্মিনেশন পদ্ধতি: এটি একটি প্রাচীন পদ্ধতি, যেখানে যেকোনো ধরনের বীজ জার্মিনেট করা যায়। তবে এই পদ্ধতিতে জার্মিনেশনের হার তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম হয়।
প্রথমে বীজগুলো ২-৩ ঘন্টা হালকা রোদে শুকাতে দিন
⬇️
এরপর ১৫-২০ মিনিট ছায়ায় রেখে দিন
⬇️
তারপর ১০-১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন
⬇️
মাটি তৈরি ও বীজ বপন পদ্ধতি:
৪০% দো-আঁশ মাটি, ৩০% খৈলের গুঁড়ো ও অন্যান্য উপাদান, ৩০% গোবর কম্পোস্ট মিশিয়ে মাটিগুলো ঝুরঝুরে করুন। তারপর বীজ সরাসরি মাটিতে বপন করুন। অঙ্কুরিত হতে ৩–৭ দিন সময় লাগতে পারে। নিয়মিত হালকা পানি দিয়ে মাটি সামান্য ভেজা রাখুন, কিন্তু পানি জমে থাকবেনা।
🎯 সবগুলো নিয়ম ঠিকমতো মেনে চাষাবাদ করলে, নিয়মিত গাছের যত্ন নিলে ও সময়মতো পানি দিলে অবশ্যই ভালো ফলন হবে। আপনার অবহেলা ও অষত্রের কারণে কোনও ক্ষতি হলে কর্তৃপক্ষ দায়ভার নিবে না।